কে বাঁচায়,কে বাঁচে কে বাঁচায় | কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু | কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2021 | k bachai k bache

 কে বাঁচায়,কে বাঁচে কে বাঁচায় , 

মানিক বন্দ্যোপান্ত

কে বাঁচায়,কে বাঁচে কে বাঁচায়

কে বাঁচায়,কে বাঁচে কে বাঁচায় গল্পের কাব্যগ্রন্থ - মহামম্বন্তর ( ভৈরব ) 


 সেদিন আপিস যাবার পথে মৃত্যুথায় প্রথম মৃত্যু দেখল - অনাহারে মৃত্যু । এতদিন শুধু শুনে আর পড়ে এসেছিল ফুটপাথে মৃত্যুর কথা , আজ চোখে পড়ল প্রথম । ফুটপাথে হাঁটা তার বেশি প্রয়োজন হয় না । নইলে দর্শনটা অনেক আগেই ঘাটে যেত সন্দেহ নেই । বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু পা হেঁটেই সে ট্রামে ওঠে , নামে গিয়ে প্রায় অফিসেরই দরজায় । বাড়িটাও তার শহরের এমন এক নিরিবিলি অণলে যে সেপাড়ায় ফুটপাথও বেশি নেই , লােকে মরতেও যায় না বেশি । চাকর ও ছােটো ভাই তার বাজার ও কেনাকাটা করে । 


কয়েক মিনিটে মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল । মনে আঘাত পেলে মৃত্যুমের শরীরে তার প্রতিক্রিয়া হয় , মানসিক বেদনাবােধের সঙ্গে চলতে থাকে শারীরিক কষ্টবােধ । আপিসে পোছে নিজের ছােটো কুঠরিতে ঢুকে সে যখন ধপ করে চেয়ারে বসে পড়ল , তখন সে রীতিমতাে কাবু হয়ে পড়েছে । একটু বসেই তাই উঠে গেল কলঘরে । দরজা বন্ধ করে বাড়ি থেকে পেট ভরে যত কিছু খেয়ে এসেছিল ভাজা , ডাল , তরকারি , মাছ , দই আর ভাত , প্রায় সব বমি করে উগড়ে দিল ।


 পাশের কুঠরি থেকে নিশ্চিল যথন খবর নিতে এল , কলঘর থেকে ফিরে মৃত্যুঞ্জয় কঁাচের মাসে জল পান করছে । প্লাসটা খালি করে নামিয়ে রেখে সে শূন্যদৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে রইল ।

কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু

 আপিসে সে আর নিখিল প্রায় সমপদস্থ । মাইনে দুজনের সমান , একটা বাড়তি দায়িত্বের জন্য মৃত্যুর পঞ্চাশ টাকা বেশি পায়নিখিল বােগা , তীক্ষ্ণবুদ্ধি এবং একটু আলসে প্রকৃতির লােক । মৃত্যুঞ্জয়ের দু'বছর আগে বিয়ে করে আট বছরে সে মােটে দুটি সন্তানের পিতা হয়েছে সংসারে তার নাকি মন নেই । অবসর জীবনটা সে বই পড়ে আর একটা চিন্তাজগৎ গড়ে তুলে কাটিয়ে দিতে চায় ।


 অন্য সকলের মতাে মৃত্যুকে সেও খুব পছন্দ করে । হয়তাে মৃদু একটু অবজার সঙ্গে । ভালও বাসে । মৃতুগ্ৰয় শুধু নিরীহ শাস্ত দরদী ভাল মানুষ বলে নয় , সৎ ও সরল বলেও নয় , মানবসভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা - তাপস বলে মৃত্যুঞ্জ দুর্বলচিত্ত ভাবশ্লবণ আদর্শবানী হলে কোনাে কথা ছিল না , দুটো খোঁচা দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুললেই তার মনের পুঞ্জ পুঞ্জ অন্ধকার বেরিয়ে এসে তাকে অবয়ে করে দিত কিন্তু মৃত্যুর মানসিক ক্রিয়া - প্রতিক্রিয়া শ্লথ , নিস্তেজ নয় । শক্তির একটা উৎস আছে তার মধ্যে , অব্যয়কে শব্দরূপ দেবার চেষ্টায় যে শক্তি বহু ক্ষয় হয়ে গেছে মানুষের জগতে তারই একটা অংশ । নিখিল পর্যন্ত তাই মাঝে মাঝে কাবু হয়ে যায় মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে । মৃদু ঈর্ষার সলোই সে তখন ভাবে যে নিখিল না হয়ে মৃত্যুঞ্জয় হলে মন্দ ছিল না । 

কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2021

মৃত্যুঞ্জয়ের রকম দেখেই নিখিল অনুমান করতে পারল , বড় একটা সমস্যার সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়েছে এবং শার্শিতে আটকানাে মৌমাছির মতাে সে মাথা খুঁড়ছে সেই স্বচ্ছ সমস্যার অকারণ অর্থহীন অনুচিত কাঠিন্যে । 

কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু

কি হল হে তােমার ? নিখিল সন্তর্পণে প্রশ্ন করল ।

ke bachai ke bache story

 মরে গেল । না খেয়ে মরে গেল । ' আনমনে অর্ধ - ভাষণে যেন আর্তনাদ করে উঠল । সত্যু । 


আরও কয়েকটি প্রশ্ন করে নিখিলের মনে হল , মৃত্যুয়ের ভিতরটা সে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যুর মতাে সাধারণ সহজবােধ্য ব্যাপারটা সে ধারণা করতে পারছে নাসেটা আশ্চর্য নয় । সে এক সঙ্গে পাহাড়প্রমাণ মালমশলা ঢােকাবার চেষ্টা ছে তার ক্ষুদ্র ধারণাশক্তির থলিটিতে । ফুটপাথের ওই বীভৎসতা ক্ষুধা অথবা মৃত্যুর রূপ ? না খেয়ে মরা কি ও কেমন ? কত কষ্ট হয় না খেয়ে মরতে , কি রকম কষ্ট ? ক্ষুধার যাতনা বেশি । মৃত্যুযন্ত্রণা বেশি — ভয়ংর ? 


অথচ নিখিল প্রশ্ন করলে সে জবাবে বলল অন্য কথা । ভাবছি , আমি বেঁচে থাকতে যে লােকটা না খেয়ে মরে গেল , এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি ? জেনে - শুনেও এতকাল চার বেলা করে খেয়েছি পেট ভরে । যথেষ্ট রিলিফ ওয়ার্ক হচ্ছে না লােরে অভাবে আর এদিকে ভেবে পাই না কি করে সময় কাটাব । ধিক । শত ধিক্ আমাকে ।কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু


 ' মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছল ছল করছে দেখে নিখিল চুপ করে থাকেদরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছুই নেই এ জগতে । নিখিলের মনটাও খারাপ হয়ে যায় । দেশের সমস্ত দরদ পুঞ্জীভূত করে ঢাললেও এ আগুন নিভবে না ক্ষুধার , অন্নের বদলে বরং সমিষে পরিণত হয়ে যাবে । 



ভিক্ষা দেওয়ার মতাে অস্বাভাবিক পাপ যদি আজও পুণ্য হয়ে থাকে , জীবনধারণের অন মানুষের দাবি জন্মাবে কিসো বুঢ় বাস্তব নিয়মকে উল্টে মধুর আধ্যাত্মিক নীতি করা যায় কিন্তু সেটা হয় অনিয়ম । চিতার আগুনে যত কোটি মড়াই এ পর্যন্ত পােড়ানাে হয়ে থাক পৃথিবীর সমস্ত জ্যান্ত মানুষগুলিকে চিতায় তুলে দিলে আগুন তাদেরও পুড়িয়ে ছাই করে দেবে । 


বিক্ষুদ্ধ চিত্তে এই সব কথা ভাবতে ভাবতে নিখিল সংবাদপত্রটি তুলে নিল । চোখ বুলিয়ে যেতে যেতে নজরে পড়ল , ভালভাবে সদগতির ব্যবস্থা করে গােটা কুড়ি মৃতদেহকে সুখে পাঠানাে হয়নি বলে একস্থানে তী  ধার হা হুতাশকরা মন্তব্য করা হয়েছে । কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু


কদিন পরেই মাইনের তারিখ এল । নিখিলকে প্রতিমাসে তিন জায়গায় কিছু কিছু টাকা পাঠাতে হয় মানি - অর্ডারের ফর্ম আনিয়ে কলম ধরে সে ভেবে ঠিক করবার চেষ্টা করছে তিনটে সাহায্যই এবার পাঁচ টাকা করে কমিয়ে দেবে কিনা । মৃতু্যয় ঘরে এসে বসল । সেদিনের পর থেকে মৃত্যুগুয়ের মুখ বিষয়া গম্ভীর হয়ে আছে । নিখিলের সঙ্গেও বেশি কথা বলেনি ।


প্রশ্ন - 
k bachai k bache question answer
k bachai k bache pdf
k bachai k bache
ke bachai ke bache story
ke bachai ke bache natok
ke bachai ke bache full story
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর
কে বাঁচায় কে বাঁচে নাট্যরূপ pdf
কে বাঁচায় কে বাঁচে pdf download
কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2021
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর saq
কে বাঁচায় কে বাঁচে মূল গ্রন্থ
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের উৎস
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের ছবি
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রেক্ষাপট ছিল
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের



 “ একটা কাজ করে দিতে হবে ভাই ' । মৃত্যুগ্ধয় একতাড়া নােট নিখিলের সামনে রাখল

কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু

 — “ টাটা কােনাে রিলিফ ফান্ডে নিয়ে আসতে হবে । 

' আমি কেন ?

 ' আমি পারব না । 

” নিখিল ধীরে ধীরে টাকাটা গুণল ।। 

" সমস্তমইনেটা ?

 ' হ্যাঁ

 বাড়িতে তাের ন'জন লােক । মাইনের টাকায় মাস চলে না । প্রতিমাসে ধার করছিস । তা হােক । আমায় কিছু একটা করতে হবে ভাই । রাতে ঘুম হয় না , খেতে বসলে খেতে পারি । না । এক বেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিআমার আর টুনুর মা’র এক বেলার ভাত বিলিয়ে দি । নিখিল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে । জ্বর হলে যেমন দেখায় মৃত্যুঞ্জয়ের গােলগাল মুখখানা তেমনি থম থম করছে । ভেতরে সে পুড়ছে সন্দেহ নেই ।

 ‘ টুনুর মার যা স্বাস্থ্য , একবেলা খেয়ে দিন পনেরাে কুড়ি টিকতে পারবে । 

মন্তব্য শুনে মৃত্যুঞ্জয় ঝঝিয়ে উঠল ।— “ আমি কি করব ? কত বলেছি , কত বুঝিয়েছি , কথা শুনবে নাআমি না খেলে উনিও খাবেন না । এ অন্যায় নয় ? অত্যাচার নয় ? মরে তাে মরর্বে না খেয়ে । 

নিখিল ভাবছিল বন্ধুকে বুঝিয়ে বলবে , এ ভাবে দেশের লােককে বাঁচানাে যায় না । যে অন্ন পাওয়া যাচ্ছে সে অন্নতে পেটে যাবেই কারাে না কারাে । কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু যে রিলিফ চলছে তা শুধু একজনের বদলে আরেকজনকে খাওয়ানাে । এতে শুধু আড়ালে যারা মরছে তাদের মরতে দিয়ে চোখের সামনে যারা মরছে তাদের কয়েকজনকে বাঁচানাের চেষ্টা করার সান্ত্বনা কিন্তু এসব কোনাে কথাই সে বলতে পারল না , গলায় আটকে গেল

শুধু বলল , — ' ভূরিভােজনটা অন্যায় , কিন্তু না খেয়ে মরাটা উচিত না ভাই । আমি কেটে হেঁটে যতদূর সম্ভব খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি । বেঁচে থাকতে যতটুকু দরকার খাই এবং দেশের সমস্ত লােক মরে গেলেও যদি সেইটুকু সংগ্রহ করার ক্ষমতা আমার থাকে , কাউকে দিয়ে নিজেই আমি তা খাব ।   কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু ( গীতিধর্মের দিক থেকে বলছি না , সমাজ ধর্মের দিক থেকে বিচার করলে দশজনকে খুন করার চেয়ে নিজেকে না খাইয়ে মারা বড়াে পাপ ।

 ' ‘ ওটা পাশবিক স্বার্থপরতা । 

 ‘ কিন্তু যারা না খেয়ে মরছে তাদের যদি এই স্বার্থপরতা থাকত ? এক কাপ অখাদ্য গুয়েল দেওয়ার বদলে তাদের যদি স্বার্থপর করে তােলা হত ? অ থাকতে বাংলায় না খেয়ে কেউ মত । না । তা সে অন্ন হাজার মাইল দুরেই থাক আর একত্রিশটা তালা লাগানাে গুদামেই থাক । '

 ‘ তুই পাগল নিখিল । বন্ধ পাগল 'বলে মৃত্যুঞ্জয় উঠে গেল

 তারপর দিন দিন কেমন যেন হয়ে যেতে লাগল মৃত্যুঞ্জয় । দেরি করে আপিসে আসে , কাজে ভুল করে , চুপ করে বসে ভাবে , এক সময় বেরিয়ে যায় । বাড়িতে তাকে পাওয়া যায় । । শহরের আদি অন্তহীন ফুটপাথ ধরে সে ঘুরে ঘুরে বেড়ায় । ডাস্টবিনের ধারে , গাছের নীচে , খােলা ফুটপাথে যারা পড়ে থাকে , অনেক রাত্রে দোকান বন্ধ হলে যারা হামাগুড়ি দিয়ে সামনের রােয়াকে উঠে একটু ভাল আশ্রয় খোঁজে , ভাের চারটে থেকে যারা লাইন দিয়ে বসে , দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মৃত্যুঞ্জয় তাদের লক্ষ্য করে । পাড়ায় পাড়ায় লঙ্গরখানা খুঁজে বার করে অন্নপ্রার্থীর ভিড় দেখে । প্রথম প্রথম সে এইসব নরনারীর যতজনের সঙ্গে সম্ভব আলাপ করতএখন সেটা বন্ধ করে দিয়েছে । সকলে এক কথাই বলে । ভাষা ও বলার ভঙ্গিা পর্যন্ত তাদের এক ধাঁচের । নেশায় আচ্ছন্ন অর্ধচেতন মানুষের প্যানপ্যানানির মতাে ঝিমানাে সুরে সেই এক ভাগ্যের কথা , দুঃখের কাহিনী । কারাে বুকে নালিশ নেই , কারাে মনে প্রতিবাদ নেই । কোথা থেকে কিভাবে কেমন করে সব ওলােট পালােট হয়ে গেল তারা জানেনি , বােঝেনি , কিন্তু মেনে নিয়েছে ।

কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু

 মৃতুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শােচনীয় টুনুর মা বিছানা নিয়েছে , বিছানায় পড়ে থেকেই সে বাড়ির ছেলে বুড়াে সকলকে তাগিদ দিয়ে দিয়ে স্বামীর খোঁজে বার বার বাইরে পাঠিয়ে দেয় । কিন্তু এই বিরাট শহরের কোথায় আগন্তুক মানুষের কোন জঞ্জালের মধ্যে তাকে তারা খুঁজে বার করবে । কিছুক্ষণ বাইরে কাটিয়ে তারা ফিরে আসে , টুনুর মাকে মিথ্যা করে বলে যে মৃত্যুঞ্জয় আসছে  কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু

খানিক পরেই আসছেখবর দিয়ে বাড়ির সকলে কেউ গম্ভীর , কেউ কাঁদ । কাদ মুখ করে বসে থাকে , ছেলেমেয়েগুলি অনাদরে অবহেলায় ক্ষুধার জ্বালায় চেঁচিয়ে কাঁদে । 

নিখিলকে বার বার আসতে হয় । টুনুর মা তাকে সকাতর অনুরােধ জানায় , সে যেন একটু নজর রাখে মৃত্যুঞ্জয়ের দিকে , একটু যেন সে সঙ্গে থাকে তার । নিখিল বলে ,

 ‘ আপনি যদি সুস্থ হয়ে উঠে ঘরের দিকে তাকান তাহলে যতক্ষণ পারি সঙ্গে থাকব , নইলে নয় ।

 টুনুর মা বলে , ‘ উঠতে পারলে আমিই তাে ওর সঙ্গে ঘুরতাম ঠাকুরপাে । 

' ঘুরতেন ? 

নিশ্চয় । ওঁ

ওর সঙ্গে থেকে থেকে আমিও অনেকটা ওঁর মতাে হয়ে গেছি । উনি পাগল । হয়ে যাচ্ছেন , আমারও মনে হচ্ছে যেন পাগল হয়ে যাব । ছেলেমেয়েগুলির জন্য সত্যি আমার ভাবনা হয় না । কেবলি মনে পড়ে ফুটপাথের ওই লােকগুলির কথা । আমাকে দু'তিন দিন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন । 

অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে টুনুর মা আবার বলে , “ আচ্ছা , কিছুই কি করা যায় না ? ” এই ভাবনাতেই ওঁর মাথাটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে । কেমন একটা ধারণা জন্মেছে , যথাসর্বস্ব দান করলেও কিছুই ভাল করতে পারবেন না । দারুণ একটা হতাশা জেগেছে ওর মনে । একেবারে মুষড়ে যাচ্ছেন দিনকে দিন ।

 নিখিল শােনে আর তার মুখ কালি হয়ে যায় ।।

 মৃত্যুঞ্জয় আপিসে যায় না । নিখিল চেষ্টা করে তার ছুটির ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছে । আপিসের ছুটির পর সে মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে যায় — মৃত্যুঞ্জয়ের ঘােরাফেরার স্থানগুলি এখন অনেকটা নির্দিষ্ট হয়ে গেছে । ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেও মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে কাটিয়ে দেয় , ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নানা ভাবে তাকে উল্টো কথা শােনায় , নিজের আগেকার যুক্তিতর্কগুলি নিজেই খণ্ড খণ্ড করে দেয় । মৃত্যুঞ্জয় শশানে কিন্তু তার চোখ দেখেই টের পাওয়া যায় যে কথার মানে সে আর বুঝতে পারছে না , তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মার পাঁচ অর্থহীন হয়ে গেছে । ক্রমে ক্রমে । নিখিলকে হাল ছেড়ে দিতে হয় ।

 তারপর মৃত্যুঞ্জয়ের গা থেকে ধূলিমলিন সিল্কের জামা অদৃশ্য হয়ে যায় । পরনের ধুতির বদলে আসে ছেড়া ন্যাকড়া , গায়ে তার মাটি জমা হয়ে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে । দাড়িতে মুখ ঢেকে যায় । ছােটো একটি মগ হাতে আরও দশজনের সঙ্গে সে পড়ে থাকে ফুটপাথে আর কাড়াকাড়ি মারামারি করে লঙ্গরখানার খিচুড়ি খায় । বলে , গাঁ থেকে এইছি । খেতে পাইনে । বাবা । আমায় খেতে দাও । ”


Note 

Article is for educational purpose only.Copyright Disclaimer Under Section 107 of the Copyright Act 1976, allowance is made for "fair use" for purposes such as criticism, comment, news reporting, teaching, scholarship, and research. Fair use is a use permitted by copyright statute that might otherwise be infringing. Non-profit, educational or personal use tips the balance in favor of fair use.


 DMCA


If we Have added some content that belong to you or your organization by mistake, We are sorry for that. We apologize for that and assure you that this wont be repeated in future. If you are rightful owner of the content used in our Website, Please mail us with your Name, Organization Name, Contact Details, Copyright infringing URL and Copyright Proof (URL or Legal Document) at 

bishnudkp@gmail.com


I assure you that, I will remove the infringing content Within 48 Hours.


Post a Comment

0 Comments