বাংলার উৎসব রচনা | Banglar Utsav Rachana | Utsav 2022

 বাংলার উৎসব রচনা | Banglar Utsav Rachana | বাংলার উৎসব বাংলা রচনা

বাংলার উৎসব রচনা | Banglar Utsav Rachana | বাংলার উৎসব বাংলা রচনা
বাংলার উৎসব রচনা


বাংলার উৎসব রচনা, Banglar Utsav Rachana বাং,উৎসব 400 শব্দের প্রবন্ধ, বাংলার উৎসব বাংলা রচনা, বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস 6, বাংলার উৎসব রচনা ১০০ শব্দে, বাংলার উৎসব রচনা ১০০ শব্দ ক্লাস ৬ ,বাংলার উৎসব রচনা 100 শব্দের মধ্যে, বাংলার উৎসব রচনা ১০০ শব্দের মধ্যে, বাংলার উৎসব ১০০ শব্দের প্র,বাংলার উৎসব কবিতা,  বাংলার উৎসব রচনা ৪০০ শব্দ, বাংলার উৎসব রচনা class 5, বাংলার উৎসব রচনা class 4, বাংলার উৎসব রচনা 100 শব্দের, বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস ১০, বাংলার উৎসব রচনা class 8, বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস ৬, বাংলার উৎসব রচনা সেকাল ও একাল বাংলার উৎসব রচনা 100 শব্দ, বাংলার উৎসব রচনা ৪০০ শব্দের প্রবন্ধ,

বাংলার উৎসব 


 * ভূমিকা : ‘ বারো মাসে তেরো পার্বণ ’ – এই নিয়েই উৎসব - প্রাণ বাঙালি । কৃষিমাতৃক বাংলাদেশ ও তার মেঠো মানুষেরা আবর্তিত ঋতুচক্রে এবং তৎসংপৃক্ত নানা ছোটো বড়ো উৎসব নিয়ে গড়ে তুলেছে নিজস্ব এক আনন্দভুবন । এই পালা - পার্বণ - উৎসবের মধ্য দিয়েই তারা ভুলতে চেয়েছে নৈমিত্তিক দিনযাপনের ক্লান্তিকর একঘেয়েমিতাকে । ( বাংলার উৎসব রচনা )

 রুপসী বাংলার অন্যতম ভূষণ এই আনন্দলহরী উৎসবমালা । কত শত কবির প্রেরণা , কত শিল্পীর ভাস্কর্য প্রতিমা বহু ধর্ম ও বর্ণে রঞ্জিত উৎসবময়ী বাংলা । বঙ্গজননীর অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যের প্রাচুর্যে মাতোয়ারা বাঙালি আপন প্রাণের স্বতস্ফূর্ত উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে নিত্য - নব উৎসব রচনায়

 কোনো সাম্রাজ্যবাদী নিষ্পেষণ কিংবা প্রাকৃতিক রোষচক্ষু কেড়ে নিতে পারেনি বাঙালির এই প্রাণজ উচ্ছ্বাস । আপন প্রাণ - প্রাচুর্যে যাবতীয় প্রতিকূলতাকে জয় করে যুগ যুগ ধরে আপন উৎসব চেতনাকে রেখেছে অটুট । বরং সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে তার চেহারা ও সাজ - সজ্জায় ঘটেছে যুগোপযোগী পরিবর্তন । কবির ভাষায়— ‘ এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ , তবু রঙ্গে ভরা । ' ( বাংলার উৎসব রচনা )

🔥 বাংলার উৎসব 400 শব্দের প্রবন্ধ 



 উৎসব কী ও কেন : উৎসব হল মানুষের অবসর মুহূর্তের আনন্দঘন প্রকাশ । বহু মানুষের একত্র সমাবেশ ঘটে এই উৎসবে । প্রাত্যহিক দিন যাপনের গ্লানি কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভোলা সম্ভব হয় উৎসবের রোশনাইয়ে । উৎসবের দিনটি আর পাঁচটি দিনের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা । আমাদের আচার - আচরণ , পোষাক - পরিচ্ছদ , সাজ - সজ্জা সমস্ত কিছুই অন্যরকম হয় এই উৎসবের দিনে ।

 অন্য দিন যারা স্বাগত নয় , উৎসবের দিনে তাদের জন্যও দ্বার অবারিত । আর এই কারণেই বাঙালি তার নিত্য - নৈমিত্তিক অভাব - অনটন , অপমান - লাঞ্ছনার মধ্যেও সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে এই উৎসবের ধারাটি চির - প্রবাহমান রেখেছে । দোল , ঝুলন , রথ , চড়ক , দুর্গাপূজা ইত্যাদি বারো মাসে তেরো পার্বণ বাঙালির সেই অনন্তপ্রবাহী জীবন ছন্দেরই এক আনন্দঘন রস প্রকাশ । (বাংলার উৎসব বাংলা রচনা ).

🔥 বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস 6


 উৎসবের প্রকারভেদ : বাঙালির প্রচলিত উৎসবগুলিকে চরিত্র ও প্রকৃতি বিচারে মোট চারভাগে বিভাজিত করা যায়— ধর্মীয় উৎসব , ঋতু উৎসব , সামাজিক উৎসব এবং জাতীয় উৎসব । ( বাংলার উৎসব রচনা ১০০ শব্দে )

আরো পড়ুন :

 বাঙালির উৎসব চেতনার মূলে রয়েছে ধর্ম এবং তৎকেন্দ্রিক পূজা - পার্বণ , আচার - আচরণ , ক্রিয়াকর্ম ইত্যাদি । বাঙালি ধর্মভীরু জাতি । তাই এই ধর্মকে নিয়ে বাঙালির জীবনে গড়ে উঠেছে অসংখ্য উৎসব ।
সিদ্ধিদাতা গণেশের পূজা দিয়ে নতুন বছরের শুভ যাত্রারম্ভ । দোকানে দোকানে খোলা হয় নতুন খাতা । নতুন সাজে সেজে ওঠে গ্রাম - গঞ্জ - শহর - বাংলার বিপণি কেন্দ্রগুলি এরপর পর্যায়ক্রমে আসে — দশহরা , রথযাত্রা , রাখি - পুর্ণিমা , ঝুলনযাত্রা , মনসা পূজা , বিশ্বকর্মা পূজা এবং বাঙালির উৎসবসম্রাজ্ঞী শারদীয়া উৎসব - দুর্গাপূজা । নতুন সাজে সেজে ওঠে সমস্ত বাঙালি । ঘরে ঘরে কেবল মিলনের সমারোহ ।

 বাস্তবিকই এই শারদোৎসব মূলতঃ এক মহান মিলনোৎসবের রূপ নেয় , মাতৃ আরাধনার আনন্দে বাঙালি ভুলে যায় জাতি - ধর্ম - বর্ণ - ধনী - দরিদ্রের সমস্ত ভেদাভেদ । এরমধ্যে আপামর বাঙালি খুঁজে পায় এক পরম আত্মতৃপ্তি । ঠিক পরের পূর্ণিমার বাঙালির ঘরে ঘরে চলে লক্ষ্মীর আবাহন । পরবর্তী অমাবস্যায় বাঙালি মেতে ওঠে দীপান্বিতা উৎসবে— আলোর নেশায় , আলোর খেলায় ।

 এরপর কার্তিক পূজা ও জগদ্ধাত্রী পূজার শেষে মাঘ মাসের শুক্লা তিথিতে শিশিরস্নাত সকালে আমরা বাগদেবীর আরাধনায় মেতে উঠি । অন্নপূর্ণা পূজার মধ্য দিয়ে বছর শেষ হয় । এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য ছোটো - বড়ো লৌকিক উৎসব । যেমন- গাজন , চড়ক , রাস , ভাদু ও টুসু পরব ইত্যাদি । এর পাশাপাশি মুসলমান সমাজের মহরম , ইদল্ - ফেতর , শবে - বরাত , বৌদ্ধদের বুদ্ধ - পূর্ণিমা , খ্রিস্টানদের বড়দিন , গুড ফ্রাইডে ইত্যাদিও যুগ যুগ ধরে বাঙালির উৎসব চেতনার সঙ্গে সমীকৃত হয়ে গিয়েছে ।

 এই উৎসবগুলিই যাবতীয় ধর্মীয় ভেদাভেদ দূর করে সকলকে একসুতোয় গেঁথে রেখেছে । বাংলার উৎসব রচনা ১০০ শব্দ ক্লাস ৬



 উৎসবের সেকাল ও একাল : যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উৎসবের আয়োজনের ক্ষেত্রেও ঘটে গিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন । প্রাচীনকালে উৎসবের কেন্দ্র ছিল রাজবাড়ি বা জমিদারবাড়ি কিংবা গ্রামের নাটমন্দির । উৎসবের প্রায় মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যেত আয়োজন । নানারকম পসরার মেলা বসত ।

বাংলার উৎসব রচনা | Banglar Utsav Rachana | Utsav 2022
বাংলার উৎসব রচনা


 মণিহারী থেকে শুরু করে হাঁড়ি , কড়াই কোনো কিছুই বাদ যেত না । যাত্রাগান , কবিগান ইত্যাদির আয়োজন করা হত । উৎসব উপলক্ষে জমিদার বা রাজারা গরিব প্রজাদের অকাতরে দান - ধ্যান করতেন । এককথায় উৎসবের আয়োজনে রাজা - প্রজা সকলের এক মহামিলন ঘটত । জাতি - ধর্ম - বর্ণ - ধনী - দরিদ্র ভেদাভেদ ভুলে কিছু সময়ের জন্য হলেও মানুষজন মেতে উঠত এক অপার্থিব আনন্দে । ( বাংলার উৎসব রচনা ৪০০ শব্দ )

🔥 বাংলার উৎসব রচনা 100 শব্দের মধ্যে


 আজ যে কোনো উৎসবেরই বাহ্য চটকদারিত্বের বিষয়টি বড়ো হয়ে ওঠে । অন্ত্যজ গ্রামের কোনোর মেলা বা উৎসবেও আজ তাই বৈদ্যুতিক নাগরদোলা , এরোপ্লেন , ম্যাজিক শো , মিনি চিড়িয়াখানা , সিনেমা প্রদর্শনী , পুষ্প প্রদর্শনী ইত্যাদির দৌরাত্ম্য । পসরাগুলিও নানা আধুনিক জিনিস পত্রে সাজানো 

। আজ বাঙালি নিজস্ব স্টাইলে কিছু উৎসব তৈরি করে নিয়েছে , যেগুলি সম্পূর্ণভাবে আধুনিক বাঙালির মননজাত । যেমন- বইমেলা , পুষ্পমেলা , শিশুমেলা , চিত্রপ্রদর্শনী ইত্যদি । বিশেষতঃ বইমেলা তো আজ বাঙালির নাগরিক জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবে পরিণত হয়েছে । এভাবেই বাঙালির উৎসব বাঙালির মনন পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকেও সুন্দরভাবে অভিযোজিত করে নিয়েছে । ( বাংলার উৎসব ১০০ শব্দের প্রবন্ধ )

 উপসংহার :  আজ সে বাংলা নেই , নেই সেই বাঙালি ; কিন্তু আছে বাঙালির নিজস্ব উৎসবগুলি । অবশ্যই নবরূপে ও নবসাজে । কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তিত আঙ্গিকেও নামে । বাঙালির উৎসবের ধর্মীয় মোড়কটি আজ অনেক ফিকে হয়ে গিয়েছে ।


উৎসবের জৌলুস বেড়েছে অনেকাংশে , বেড়েছে বাণিজ্যিক প্রবণতা , কিন্তু হারিয়ে গিয়েছে উৎসবের সেই প্রাচীন প্রাণস্পন্দন । নাগরিক সভ্যতার বিষাক্ত নিঃশ্বাসে এবং পাশ্চাত্য সভ্যতার ক্রম আগ্রাসনে বাঙালির উৎসব - আত্মা আজ মুমূর্ষু । বাইরে ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্য বাড়লেও অন্তরে ঐশ্বর্য আজ ভুলুণ্ঠিত ।

এটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই । বাইরে ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্য বাড়লেও অন্তরে ঐশ্বর্য আজ ভূলুণ্ঠিত । এটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই । তবে এই আন্তর - ঐশ্বর্যের দিকটি বাদ দিলে বাঙালির উৎসব প্রচার ও বিজ্ঞানের আলোয় তার জীবনে আজ এক নতুন দ্যোতনায় আসীন । হাজারো সমস্যার মাঝেও বাঙালীকে ‘ বাঙালি ’ করে রেখেছে বাঙালির এই উৎসবপ্রিয়তা

Post a Comment

0 Comments